আয়তন : ৯২৮.৩৪ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা : ১৪,৯৬,১৩৮
সাক্ষরতার হার : ৫৯.৬০%
অবস্থান ও সীমানা :
রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ১৬১ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৯৭ কিলোমিটার। এ জেলার পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা , উত্তরে কুমিল্লা জেলা ও ভারতের
ত্রিপুরা প্রদেশ , পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ , দক্ষিণ-পূর্বে চট্টগ্রাম জেলা এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত।
নামকরণ :
ফেনী নদীর নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে ফেনী। মধ্যযুগে কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় একটি বিশেষ নদীর স্রোতধারা ও ফেরী পারাপারের ঘাট হিসেবে ফনী শব্দের ব্যবহার পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ষোড়শ শতাব্দীর সময়ে কবি কবীন্দ্র পরমেশ্বর পরাগলপুরের বর্ণনায় উল্লেখ করেন, ফনী নদীতে বেষ্টিত চারিধার, পূর্বে মহাগিরি পার নাই তার। এরপর সতের শতকে মির্জা নাথানের ফার্সী ভাষায় রচিত
বাহরিস্তান-ই-গায়েবী তে ফনী শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে ফেনী -তে পরিণত হয়। ধারণা করা হয় আদি শব্দ ফনী মুসলমান কবি ও সাহিত্যিকদের ভাষায় ফেনীতে পরিণত হয়েছে।
ফেনী জেলায় রুপান্তর :
১৯৮৪ সালে প্রশাসনিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে যে সকল মহকুমাকে মানোন্নীত করে জেলায় রূপান্তর করা হয়েছিল ফেনী জেলা তার একটি। ১৯৮৪ সালের পূর্বে এটি নোয়াখালী জেলার একটি মহকুমা ছিল। এ মহকুমার গোড়াপত্তন হয় ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মীরসরাই, ছাগলনাইয়া ও আমীরগাঁও এর সমন্বয়ে। প্রথম মহকুমা প্রশাসক ছিলেন কবি নবীনচন্দ্র সেন । ১৮৭৬ সালে মীরসরাইকে কর্তন করে চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্ভক্ত করা হয়। প্রথম মহকুমা সদর দপ্তর ছিল আমীরগাঁওয়ে। ১৮৭২ থেকে ১৮৭৪ সালের মধ্যে মোগল আমলের আমীরগাঁও থানা নদী ভাঙ্গনের ফলে ফেনী নদীর ঘাটের কাছাকাছি খাইয়ারাতে স্থানান্তরিত হয়। পরবর্তীতে এটি ফেনী থানা নামে পরিচিত হয়। অতঃপর ১৮৭৬ সালে নতুন মহকুমার পত্তন হলে খাইয়ারা থেকে থানা দপ্তরটি মহকুমা সদরে স্থানান্তরিত হয় ও নতুন মহকুমাটি ফেনী নামে পরিচিত হয়। [৩] পরবর্তীতে ১৮৮১ সালে তা ফেনী শহরে স্থানান্তরিত হয়।
অতিত ইতিহাস :
দূর অতীতে এ অঞ্চল ছিল সাগরের অংশ, তবে উত্তর পূর্ব দিক ছিল পাহাড়িয়া অঞ্চলের পাদদেশ। ফেনীর পূর্ব দিকের রঘুনন্দন পাহাড় থেকে কাজিরবাগের পোড়ামাটি অঞ্চলে হয়ত আদিকালে শিকারী মানুষের প্রথম পদচিহ্ন পড়েছিল। এখানকার ছাগলনাইয়া গ্রামে ১৯৬৩ সালে একটা পুকুর খননকালে নব্য প্রস্তর যুগের মানুষের ব্যবহৃত একটা হাতিয়ার বা হাতকুড়াল পাওয়া গেছে। পণ্ডিতদের মতে ঐ হাতকুড়াল প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরাতন।
বৃহত্তর নোয়াখালীর মধ্যে পূর্ব দিকের ফেনী অঞ্চলকে ভূ-খণ্ড হিসেবে অধিকতর প্রাচীন বলে পণ্ডিতগণ মত প্রকাশ করেছেন। ফেনীর পূর্বভাগের ছাগলনাইয়া উপজেলার শিলুয়া গ্রামে রয়েছে এক প্রাচীন ঐতিহাসিক শিলামূর্তির ধ্বংসাবশেষ। প্রকাশ শিলামূর্তির অবস্থানের কারণে স্থানটি শিলুয়া বা শিল্লা নামে পরিচিত হয়েছে। প্রাচীন কালে হয়ত এখানে বৌদ্ধ ধর্ম ও কৃষ্টির বিকাশ ঘটেছিল।
ড. আহমদ শরীফ চট্টগ্রামের ইতিকথায় বলেছেন, প্রাচীনকালে আধুনিক ফেনী অঞ্চল ছাড়া নোয়াখালীর বেশির ভাগ ছিল নিম্ন জলাভূমি। তখন ভুলুয়া (নোয়াখালীর আদি নাম) ও জুগিদিয়া (ফেনী নদীর সাগর সঙ্গমে অবস্থিত) ছিল দ্বীপের মতো। ছাগলনাইয়া নামকরণ সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন যে, ইংরেজ আমলের শুরুতে সাগর (Sagor) শব্দটি ভুল ক্রমে সাগল (Sagol) নামে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। তাই ছাগল নাইয়া শব্দটি প্রচলিত হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য ইংরেজ আমলের পূর্বে কোন পুঁথি পত্রে ছাগল নাইয়া নামের কোন স্থানের নাম পাওয়া যায় না।
ফেনী নদীর তীরে রঘুনন্দন পাহাড়ের পাদদেশে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বীর বাঙ্গালী শমসের গাজীর রাজধানী ছিল। তিনি এখান থেকে যুদ্ধাভিযানে গিয়ে রৌশনাবাদ ও ত্রিপুরা রাজ্য জয় করেন। তিনি চম্পক নগরের একাংশের নামকরণ করেছিলেন জগন্নাথ সোনাপুর।
প্রশাসনীক এলাকা :
ফেনী জেলায় মোট ৬টি উপজেলা রয়েছে
০১ ছাগলনাইয়া
০২ দাগনভূঁইয়া
০৩ পরশুরাম
০৪ ফুলগাজী
০৫ ফেনী সদর
০৬ সোনাগাজী
অর্থনীতি :
ফেনী জেলার অর্থনীতি প্রধানত কৃষি নির্ভর। জেলার মধ্য দিয়ে কয়েকটি নদী প্রবাহিত হওয়ার ফলে এর কৃষি জমি সমূহ বেশ উর্বর। এছাড়া এ অঞ্চলের অনেক লোক বিদেশ থাকার ফলে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক আয় এ জেলার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। বর্তমানে অনেক কলকারখানা এখানকার অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ ব্যাবস্থাকে সমৃদ্ধ ও সমুন্নত করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকাশিত আর্থিক অন্তর্ভূক্ত সূচীতে ফেনী দ্বিতীয়।
নদ-নদী :
ফেনী জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলো হল
ফেনী নদী , মুহুরী নদী , ছোট ফেনী নদী ,
কহুয়া নদী , সিলোনিয়া নদী এবং
কালিদাস পাহালিয়া নদী
দর্শনীয় স্থান :
কাজিরবাগ ইকো পার্ক
চাঁদ গাজী ভুঞার মসজিদ
চৌধুরী বাগান বাড়ী
জগন্নাথ কালী মন্দির
প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি
ফেনী নদী
ফেনী বিমানবন্দর
বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ি
বিজয় সিংহ দীঘি
ভাষা শহীদ সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর
মুহুরী প্রজেক্ট
রাজাঝির দীঘি
শমসের গাজীর
ভিন্ন তথ্য :
জাতীয় অর্থনীতিতে ফেনী ২য়
আয়তনের দিক দিয়ে ফেনীতে সোনাগাজি ১ম
শিক্ষার হারের দিক দিয়ে ফেনীতে সোনাগাজি ১ম
মসজিদের সংখ্যার দিক দিয়ে ফেনীতে ফেনী সদর ১ম
প্রবাসির দিক দিয়ে ফেনীতে ফুলগাজি ১ম
জনসংখ্যার দিক দিয়ে ফেনীতে ফেনী সদর ১ম
ফেনীর আঞ্চলিক ভাষা নোয়াখাইল্লা
জাতীয় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় ফেনীর গুরুত্ব অপরিসীম
তথ্যসংগ্রহে : মোঃ রিফাত হোসেন
............................................. তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া এবং বাংলাদেশ তথ্য বাতায়ন
উপজেলা ভিত্তিক তথ্য
ফুলগাজির সকল তথ্য
ছাগলনাইয়ার সকল তথ্য
পরশুরামের সকল তথ্য
সোনাগাজির সকল তথ্য
ফেনী সদর এর সকল তথ্য
দাগনভূঞার সকল তথ্য
Comments
Post a Comment