Skip to main content

মেঘলা আকাশ

 


আজকে খুব ভাল লাগছে আমার।কারন আমি জীবনেওট্রেনে ভ্রমন করিনি আজ করব।আমাদের বাসা কুমিল্লা আর ট্রেনে করে বেড়াতে যাবো আমার খালার বাসায়উনার বাসা সিলেট।উনার বাসায় আরো অনেক বারই যাওয়া হইছে বাসে করে কিন্তু ট্রেনে করে এই প্রথম যাওয়া।আবার সিলেট শহর টা অনেক সুন্দর একটা শহর। অনেক দিন পরে খালার বাসায় যাচ্ছি তাই আজকে মনের মধ্যে অজানা এক উৎফুল্ল ও ভাললাগা কাজ করছে।

.

কুমিল্লা ট্রেন স্টেশনে গিয়ে একটা টিকেট কেটে বসে আছি। দশমিনিট পরে ট্রেন আসবে।দেখতে দেখতে ট্রেন এসে গেল।আমি আমার ব্যাগ টা নিয়ে ট্রেনের মধ্যে আমার সিট খুঁজে বসে পড়লাম।আমার ভাগ্য মনে হয় ভালই ছিল। আমি যে ট্রেনে জানালার পাশে সিট পেয়েছি।একটু পরে একটা মেয়ে এসে পাশে বসল।মেয়েটা অনেক সুন্দরি ছিল।

.

ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে ট্রেনের গতির সাথে সাথে গাছ-পালা গুলোও দুরে চলে যাচ্ছে।মাঝে মাঝে রেললাইনের

পাশের বাড়ির সামনে ছোট ছোট বাচ্চাদের হৈ চৈ দেখতে পেলাম হয়ত ট্রেন দেখে ওরাও আনন্দ পাচ্ছে।এই সব আনন্দঘন দৃশ্য গুলো দেখে অজান্তেই মনের মধ্যে অন্যরকম শিহরন বয়ে যেতে লাগল।

.

--এই ছেলে একটা কথা ছিল।

--হুম বলেন।

--কিছু মনে করবের না তো।

--না বলেন।

--আমাকে এই জানালার পাশের সিটে বসতে দিন।

--বললেই হল।এটা আমার সিট আমিই বসব।

--কই দেখি দেখি।সিটে আপনার নাম আছে নাকি।

--সিটে নাম থাকবে কেন।

--এখনি তো বললেন এটা আপনার সিট।আপনার সিট হলে তো নাম থাকবেই।

--টিকেট কেটেছি আমি এই সিটের জন্য এবার বুঝেছেন।

--হুম।বুঝলাম।দেখি টিকেটটা।

--এই যে দেখেন সিট নাম্বার।

.

বলতেই টিকেটটা ছু মেরে হাত থেকে কেড়ে নিল মেয়েটা।

.

--এবার কি হবে মিস্টার।

--আরে আরে আপনি আমার টিকেট নিলেন কেন।

--টিকেট নিয়েছি আপনাকে পুলিশে ধরিয়ে দিব।বলব আপনি বিনা টিকিটে ট্রেনে চরেছেন।

--প্লিজ এমনটি করবেন না।

--ঠিক আছে করবনা।আপনার সিটে আমাকে বসতে দিন টিকিট ফিরিয়ে দিব।

--ওকে।বসেন।

.

এই বলে আমি মেয়েটাকে আমার প্রিয় জানালার সিট ছেড়ে দিলাম আর মেয়েটা টিকেট টা দিল।মনে মনে

ভাবছি কি সাংঘাতিক মেয়েরে বাবা পুরাই ছিনতাই কারিদের মত স্বভাব।যাক বাবা জানালার পাশের সিট গেলে গেছে মিথ্যা বলে যে পুলিশে দেয় নি আল্লাহর কাছে হাজারশোকর।

.

--সরি।

--সরি কেন।

--আপনার সাথে খারাপ আচরণ করার জন্য।

--ইটস ওকে।

--আসলে আমি জানালার পাশের সিট ছাড়া বসতে পারিনা।

--ঠিক আছে।বসেন।

--আপনার নাম কি।

--জয়।আপনার।

--মিথিলা।কিসে পড়েন আপনি।

--আমি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি।আপনি।

--আমি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি।আপনার বাসা কি সিলেট নাকি।

--না।কুমিল্লা। সিলেট আমার খালামনির বাসা।আপনার বাসা কোথায়।


 


--আমার বাসা সিলেট।কুমিল্লা আমার নানুর বাসা সেখানেই বেড়াতে গিয়েছিলাম।

--ওও।ভাল।

.

আর কথা না বলে আমার মোবাইলটা বের করে ফেসবুকে লগিন করলাম।ফেসবুকে বিভিন্ন পেজের গল্প পড়তে লাগলাম ও মাঝে মাঝে বন্ধুদের ছবিতে লাইক দিচ্ছি। মেয়েটার দিকে আরচোখে তাকিয়ে দেখলাম।মেয়েটা একদৃষ্টিতে বাহিরের দিকে তাকিয়ে প্রাকৃতির অপরুপ সৌন্দয উপভোগ করছে।

আমি আর কোন কথা বললাম না।কারন মেয়েদের সাথে আমি কথা বলতে পারিনা প্যাচ লাগাই ফেলি লজ্জা বেশি তো তাইতো।তাই কথা না বলাই উত্তম।

.

দেখতে দেখতে ট্রেন সিলেট চলে এসেছে।এখনি ট্রেন থেমে যাবে।আর একটু পরেই সবাই নেমে যাবে এই ট্রেন থেকে।প্রায় ছয় ঘন্টার এই ভ্রমন শেষে নিজেকে খুব ট্রায়াড মনে হচ্ছে।মিথিলা বলল,,বাই আশাকরি আবার দেখা হবে। আমিও বাই বলে নেমে গেলাম ট্রেন থেকে।

.

রাতে খালামনি বাসায় রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে ফেসবুকে লগইন করলাম।ফেসবুকে ঢুকেই দেখি একটা ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট আসছে আইডির নাম মেঘকন্যা মিথিলা।প্রোফাইল পিকচারে একটি প্রজাপতির ছবি।প্রোফাইলের প্রজাপতিটা অনেক সুন্দর ছিল।একসেপ্ট করলাম।সাথে সাথে একটা মেসেজ আসল।

.

--হাই।

--হ্যালো।

--কি অবস্থা।

--ভাল।আপনার।

--ভাল।আমাকে কি চিনছেন।

--না তো কে আপনি।

--আমি মিথিলা।

--কোন মিথিলা।

--আরে আজ ট্রেনে কথা হয়েছিল।

--ওও।চিনেছি।কিন্তু আপনি আমার আইডির নাম কিভাবে পেলেন।

--আপনি ট্রেনে ফেসবুক চালাচ্ছিলেন তখন আপনার প্রোফাইল নাম আর পিকচার দেখিছিলাম।

--ওও।তাই।

--হুম।কি করেন।

--এই তো রাতের খাবার শেষ করে শুয়ে আছি।একটু পরে ঘুমাবো।আপনি।

--আমিও খাবার শেষ করে শুইলাম।আর ঘুমাবো।

--ওকে।শুভ রাত্রি।আবার কথা হবে।

--শুভ রাত্রি।(এই বলে ফেসবুক থেকে লগআউট করললাম)

.

প্রতিদিন মিথিলার সাথে চ্যাটিং হত।আস্তে আস্তে আমরা ভাল বন্ধু হয়ে গেলাম।তারপর দুইজন নাম্বার নিয়ে মোবাইলেও কথা হত।প্রতিদিন মোবাইলে কথা হত কেন যেন আমি মিথিলার সাথে এখন একদিন কথা না বললেই মনে হাজার বছর ধরে মিথিলার সাথে কথা হয় না।

.

আস্তে আস্তে আমি মিথিলার উপরে দুর্বল হয়ে গেলাম। কিন্তু তাকে ভালবাসি এই বলতে খুব ভয় করছে যদি সে আমাকে ছেড়ে চলে যায়।থাক বন্ধু হয়েই থাকি এতেই ভাল ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

.

একদিন মিথিলা বলল সে নাকি কুমিল্লা তার নানুর বাসায় আসছে।আর সে আমাকে দেখতে চায় কত্ত দিন

হয়ে গেল আমাকে দেখেছে।সেই ট্রেন ভ্রমনে দেখেছে। আমি বলে দিলাম বিকেলে দেখা করব ইকো পার্কে।

.

আজ ভাবছি সাহস করে মিথিলাকে মনের কথা বলে দিব। যা হবার তাই হবে।তবুও আজ বলতেই হবে।কারন আমি জানি মিথিলাও আমাকে ভালবাসে।আর এটাও আমি জানি মেয়েদের বুক ফাটে কিন্তু মুখ ফাটে না।তাই মিথিলাও  বলতে পারবে না।যা বলার আমিই বলতে হবে। সবাই দোয়া করবেন যেন সাহস না হারাই।(কাল্পনিক)

Comments

Popular posts from this blog

ছাগলনাইয়ার সকল তথ্য

আয়তন : ১৩৩.৪৯ কিঃমিঃ জনসংখ্যা : ১,৭০,৫২৪ (প্রায়) সাক্ষরতার হার : ৬৩.১% অবস্থান : উত্তরে ফুলগাজী উপজেলা, দক্ষিনে মিরসরাই উপজেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে ফেনী সদর উপজেলা নামকরণ : ছাগলনাইয়া নামকরণ সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন যে ইংরেজ আমলের শুরুতে সাগর (Sagor) শব্দটি ভুল ক্রমে সাগল (Sagol) নামে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। তাই ছাগলনাইয়া শব্দটি প্রচলিত হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য ইংরেজ আমলের পূর্বে কোন পুথি পত্রে ছাগলনাইয়া নামের কোন স্থানের নাম পাওয়া যায় না। প্রশাসনীক এলাকা : ছাগলনাইয়া উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম ছাগলনাইয়া থানার আওতাধীন। পৌরসভা: ছাগলনাইয়া ইউনিয়নসমূহ: ৫নং মহামায়া ৬নং পাঠাননগর ৭নং ছাগলনাইয়া (ছাগলনাইয়া ইউনিয়নের সম্পূর্ণ অংশ ছাগলনাইয়া পৌরসভার আওতাধীন হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যক্রম বর্তমানে বিলুপ্ত) ৮নং রাধানগর ৯নং শুভপুর ১০নং ঘোপাল অতিত ইতিহাস : কিছু প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী বর্তমান ছাগলনাইয়া কোন এক সময়ে বৌদ্ধ সভ্যতার অন্তর্গত ছিল। পরে উত্তরের পাহাড়ী স্রোতে, প্রাকৃতিক কারণে বা নদী ভাঙ্...

ইংরেজি শিখার কিছু অসাধারণ টিপস? কিন্তু কী? সেই টিপস?

 ঘরে বসে ইংরেজি শিক্ষা করার অনেক টিপস আপনি ইউটিউব, ফেইসবুক অর্থাৎ অনলাইন জগতে আপনি অনেক দেখেছেন । কিন্তু আপনি কোন একটি টিপস কাজে লাগিয়েছেন?  না!  আপনি লাগান নাই!  যদি লাগাতেন অবশ্যই আপনার একটু হলেও দক্ষতা বাড়তো ।    তাই বলছি যতোই ইউটিউব ফেইসবুকে টিপস দেখুন না কেন?  সেগুলোকে কাজে লাগাতে না পারলে আপনার শুধু শুধু সময় এবং চোখের দৃষ্টি নষ্ট করছেন । তাই আমি আপনাদের জন্য আমার নিজস্ব মতামত অর্থাৎ যেটা আমি নিজে প্রয়োগ করে নিজের একটু হলেও ইংরেজীতে দক্ষতা বাড়াতে পারছি সেগুলো তুলে ধরছি ।  ১.  দৈনিক ১০টি করে হলেও শব্দার্থ মুখস্ত করুন । এবং সেগুলোকে প্রথমে মনে মনে নিজের কথা বলার সময় ইউস করুন পরে প্রকাশ্যে ইউস করুন    ২. চেষ্টা করবেন ইংলিশ রোমান্টিক মুভি দেখতে তবে মনে রাখবেন কোন হিট মুভি যেটাকে সোজা বাংলায় বলে মাইর-ফিটের ছবি ঐগুলো দেখবেন না, কারণ ঐসব মুভির কথাগুলো তেমন একটা বুঝা যায় না । যদি আপনি ভালো ইংরেজি বুঝেন তবে দেখতে পারেন প্রবলেম নেই । ৩. সব সময় ইংলিশ ইভেন্ট দেখার জন্য চেষ্টা করবেন, খেলার ইভেন্ট, গানের ইভেন্ট, প্রতিযোগিতার ইভেন্ট যেগুলো উপ...

দাগনভূঞার সকল তথ্য

আয়তন : ১৬৫.৮৪ বর্গ (কি:মি:) জনসংখ্যা : ২২৫৪৬৪ জন (রিপার্ট-২০১১) সাক্ষরতার হার : ৫৫.৪৮% অবস্থান : এ উপজেলা ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের(এন ১০৪) উপর অবস্থিত। এই উপজেলার উপর দিয়েই চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও বরিশাল বিভাগে যাতায়াত করা হয়।  ফেনী জেলা সদর থেকে এ উপজেলার দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এ উপজেলার পূর্বে ফেনী সদর উপজেলা , দক্ষিণ-পূর্বে সোনাগাজী উপজেলা , দক্ষিণে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা , পশ্চিমে নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলা এবং উত্তরে কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলা ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা অবস্থিত। নাম করণ : দাগনভূঁইয়া উপজেলার পূর্ব নাম গোপীগঞ্জ, যা ভুলুয়া রাজ্যের অধীনে শাসিত হত। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রখ্যাত জমিদার শ্রী অরুণ সিং বাহাদুরের স্ত্রীর নাম ছিল শ্রী গোপীদেবী যিনি স্বামীর জমিদারীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সে থেকে তার নাম অনুসারে জমিদারী স্ট্রেট গোপীগঞ্জ নামে পরিচিতি লাভ করে। জমির আহমেদ-এর সূত্র মতে, পরবর্তীতে মুঘল সম্রাট শাহাজাহানের পুত্র শাহাজাদা সুজার আমলে বার ভূঁইয়াদের কোন এক উপবংশের মাতু ভূঁইয়া ও দাগন ভূঁ...