Skip to main content

ভবিষ্যতে বিশ্বকে নেতৃত্ব কে দিতে পারে? চীন?

 

ভবিষ্যতে বিশ্বকে নেতৃত্ব কে দিতে পারে?

চীন?

বর্তমান বিশ্বকে কী আদৌ যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দিচ্ছে? স্পষ্ট করে বললে বলা উচিত যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকে শোষণ করছে।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে স্নায়ুযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিজয়ের পর, ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া দেশগুলোকে একে একে ধরাশায়ী করতে থাকে। একটু উদাহরণ দিলেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যায়। ১৯৯১ সালে প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধে সোভিয়েত পন্থী ইরাকের হার যেখানে এমেরিকা প্রত্যাক্ষ ও পরোক্ষভাবে উভয়পক্ষকে সাহায্য করেছে। ১৯৯৯ সালে সার্বিয়ার বিপক্ষে কথিত সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ এনে ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের বোম্বিং, উল্লেখ্য এই সার্বিয়া রাশিয়ার অতি ঘনিষ্ঠ মিত্র আসলে। এরপরই সেখানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ইউরোপের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাটি ক্যাম্প বন্ডস্টিল স্থাপন করে।

তারপর ২০০১ সালে সাদ্দামের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে ইরাকে বর্বর হামলা চালায়, লিবিয়ায় গাদ্দাফিকেও ঠিক ওই ক্যামিকেল অস্ত্রের মজুদ আছে অজুহাত দিয়্র উচ্ছেদ করল। বর্তমানে সিরিয়ায় ও ইরাকে এমেরিকার যে অবস্থান এটা সম্পূর্ন অবৈধ যেখানে ইরানের ইরাকে ও রাশিয়ার সিরিয়ায় অবস্থান বৈধ কেননা তাদের দেশের সরকারই তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এমেরিকাকে কেউ ডাকেনি কিন্তু তথাকথিত শান্তিরক্ষার জন্য তারা বেআইনিভাবে সেখানে অবস্থান করছে৷

সম্প্রতি একটা ছবি ইন্টারনেটে বেশ ভাইরাল হয়েছে। নিচের ছবিতে দেখা যাচ্ছে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভি'চিক ট্রাম্পের সামনে ওভাল অফিসে এমনভাবে বসে আছেন যেন মনে হচ্ছে ট্রাম্প কোন কলেজের প্রিন্সিপল আর ভি'চিক হচ্ছেন কলেজ ছাত্র। এই ছবিটি সার্বিয়ায় বেশ সমালোচিত হয়েছে।

সবথেকে বড় ধাক্কা ছিল যখন ভি'চিককে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে বলা হয়। সেটা ছিল কসোভাকে স্বীকৃতি দান ( উল্লেখ্য কসোভা আসলে সার্বিয়ারই অংশ কিন্তু ইউএস ও পশ্চিমাদের মদদে এই বিভক্তি হচ্ছে), কিন্তু তারপর যেটা ঘটল সেটা ছিল আরও বড় ধাক্কা! চুক্তিতে বলা আছে ইসরায়েলে সার্বিয়ার দূতাবাসকে জেরুজালেমে স্থানান্তর ও জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকার করে নিতে হবে। ওই এক মূহুর্তের জন্য হলেও ভি'চিক তার মিত্র রাশিয়া ও আরব সম্প্রদায়ের সমর্থন চিন্তা করে উদ্বিগ্ন অবশ্যই হয়েছিলেন।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঘটনা নিয়ে কৌতুক করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্টও দিয়েছিলেন। রাশিয়ানদের মতে সার্বিয়া বহুবার ইউএস ও ন্যাটো দ্বারা ধর্ষিত ও লাঞ্চিত হয়েছে।

সুতরাং দেখেছেন ইউএস কীভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে? এটাকে নেতৃত্ব বলে?

ট্রাম্প প্রশাসন এখন উদীয়মান সুপারপাওয়ার চীনকে আটকানোর জন্য আরো নিষেধাজ্ঞা দিবে শুনলাম। উইঘুর মুসলমান প্রেক্ষাপটের অজুহাত দিয়ে আরো কিছু নিষেধাজ্ঞা চীনের কপালে জুড়ে দেবে।

আমি জানি অনেকেই মনে করেন যে ইউএসের স্থানের উত্তরাধিকারী হতে যাচ্ছে চীন কেননা অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিক, সামরিক সবদিক থেকে চীন ইউএসের সাথে যে গ্যাপ আছে সেটা কমিয়ে ফেলছে এবং বেশ দ্রুত গতিতে।

আমি চীনের সীমাবদ্ধতা দেখি সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তিতে এবং সমর প্রযুক্তিতে। চীনের সমর প্রযুক্তির কোয়ালিটি এখনও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাল্লা দেওয়ার মতো নয়। তবে চীনের উন্নত মানের গবেষণা ও বিশাল অর্থনীতি এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে পারে অদূর ভবিষ্যতে। যাইহোক, এখানে এই উত্তরে চীন-ইউএস সক্ষমতা অতটা তুলনা নাই করলাম তবে একটা কথা সত্য ইতিমধ্যেই ইউএসের ইউনিপোলার পৃথিবী মডেল এখন মাল্টিপোলারে রূপ নিতে যাচ্ছে।

প্রত্যেকটি বড় বড় সাম্রাজ্যের প্রতিস্থাপন ঘটেছে তার থেকে তূলনামূলক সক্ষমতায় নিচু গোষ্ঠী/সাম্রাজ্য দ্বারা। নেবুচাঁদনেজার মডেল / মূর্তি এই বিষয়টিকে তুলে ধরে যা নিচের চিত্রে দেখতে পাবেন৷ অর্থাৎ সোনার পর আসছে রূপা, রূপার পর ব্রোঞ্জ এভাবে একটি অপেক্ষাকৃত প্রতাপশালী সাম্রাজ্য তার চেয়ে কম প্রতাপশালী সাম্রাজ্য দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এর ভালো সত্যতাও মিলবে। যদিও অনেকে এর সাথে দ্বিমত পোষণ করেন

চীন সেইদিক থেকে যথেষ্ট ক্ষমতাবান। কিন্তু একটা কথা সত্য এখন পর্যন্ত ক্ষমতার এই হস্তান্তর রক্তপাতহীনভাবে কখনও হয়নি।

স্পেনিশদের রক্ত ঝড়িয়ে ব্রিটিশরা আসল ক্ষমতায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রায় সবার রক্ত ঝড়িয়ে ক্ষমতায় আসল যুক্তরাষ্ট্র ( ইউএসের কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অনেক কম ক্ষতি হয়েছে অন্যান্য গ্রেট পাওয়ারদের তুলনায়), অতীতে গ্রেটপাওয়ারদের মধ্যে সংঘাত যুদ্ধ লেগেই ছিল।

চীনের ক্ষেত্রে কী হবে বলা মুশকিল। ইতিহাস কি আবার নিজেকে রিপিট করবে? আপনার কি মনে হয়?

ভবিষ্যতের পৃথিবীর নেতৃত্ব রাশিয়া, চীন, এমেরিকার যেকোন একটির কাছেই থাকবে৷

তবে হ্যা এমেরিকার একদিন না একদিন ক্ষমতা থেকে নামতেই হবে।


সূত্র : কোরা

Comments

Popular posts from this blog

ছাগলনাইয়ার সকল তথ্য

আয়তন : ১৩৩.৪৯ কিঃমিঃ জনসংখ্যা : ১,৭০,৫২৪ (প্রায়) সাক্ষরতার হার : ৬৩.১% অবস্থান : উত্তরে ফুলগাজী উপজেলা, দক্ষিনে মিরসরাই উপজেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে ফেনী সদর উপজেলা নামকরণ : ছাগলনাইয়া নামকরণ সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন যে ইংরেজ আমলের শুরুতে সাগর (Sagor) শব্দটি ভুল ক্রমে সাগল (Sagol) নামে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। তাই ছাগলনাইয়া শব্দটি প্রচলিত হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য ইংরেজ আমলের পূর্বে কোন পুথি পত্রে ছাগলনাইয়া নামের কোন স্থানের নাম পাওয়া যায় না। প্রশাসনীক এলাকা : ছাগলনাইয়া উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম ছাগলনাইয়া থানার আওতাধীন। পৌরসভা: ছাগলনাইয়া ইউনিয়নসমূহ: ৫নং মহামায়া ৬নং পাঠাননগর ৭নং ছাগলনাইয়া (ছাগলনাইয়া ইউনিয়নের সম্পূর্ণ অংশ ছাগলনাইয়া পৌরসভার আওতাধীন হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যক্রম বর্তমানে বিলুপ্ত) ৮নং রাধানগর ৯নং শুভপুর ১০নং ঘোপাল অতিত ইতিহাস : কিছু প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী বর্তমান ছাগলনাইয়া কোন এক সময়ে বৌদ্ধ সভ্যতার অন্তর্গত ছিল। পরে উত্তরের পাহাড়ী স্রোতে, প্রাকৃতিক কারণে বা নদী ভাঙ্...

দাগনভূঞার সকল তথ্য

আয়তন : ১৬৫.৮৪ বর্গ (কি:মি:) জনসংখ্যা : ২২৫৪৬৪ জন (রিপার্ট-২০১১) সাক্ষরতার হার : ৫৫.৪৮% অবস্থান : এ উপজেলা ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের(এন ১০৪) উপর অবস্থিত। এই উপজেলার উপর দিয়েই চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও বরিশাল বিভাগে যাতায়াত করা হয়।  ফেনী জেলা সদর থেকে এ উপজেলার দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এ উপজেলার পূর্বে ফেনী সদর উপজেলা , দক্ষিণ-পূর্বে সোনাগাজী উপজেলা , দক্ষিণে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা , পশ্চিমে নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলা এবং উত্তরে কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলা ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা অবস্থিত। নাম করণ : দাগনভূঁইয়া উপজেলার পূর্ব নাম গোপীগঞ্জ, যা ভুলুয়া রাজ্যের অধীনে শাসিত হত। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রখ্যাত জমিদার শ্রী অরুণ সিং বাহাদুরের স্ত্রীর নাম ছিল শ্রী গোপীদেবী যিনি স্বামীর জমিদারীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সে থেকে তার নাম অনুসারে জমিদারী স্ট্রেট গোপীগঞ্জ নামে পরিচিতি লাভ করে। জমির আহমেদ-এর সূত্র মতে, পরবর্তীতে মুঘল সম্রাট শাহাজাহানের পুত্র শাহাজাদা সুজার আমলে বার ভূঁইয়াদের কোন এক উপবংশের মাতু ভূঁইয়া ও দাগন ভূঁ...

পরশুরামের সকল তথ্য

আয়তন : ৯৫.৭৫ বর্গ কিঃমিঃ জনসংখ্যা : ১,০১,০৬২ সাক্ষরতার হার : ৫৭.৩০% অবস্থান : পরশুরাম উপজেলার আয়তন ৯৫.৭৬ বর্গ কিলোমিটার। এটি আয়তনের দিক থেকে ফেনী জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা। এ উপজেলার দক্ষিণে ফুলগাজী উপজেলা এবং পূর্ব, উত্তর ও পশ্চিম তিনদিকেই ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ । প্রশাসনীক এলাকা : পরশুরাম উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরশুরাম থানার আওতাধীন। পৌরসভা পরশুরাম ইউনিয়নসমূহ ১নং মির্জানগর ২নং পরশুরাম (পরশুরাম ইউনিয়নের সম্পূর্ণ অংশ পরশুরাম পৌরসভার আওতাধীন হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যক্রম বর্তমানে বিলুপ্ত) ৩নং চিথলিয়া ৪নং বক্স মাহমুদ নামকরণ : কথিত আছে , অত্র এলাকায় জনৈক পরশুরাম চৌধুরী নামীয় একজন জমিদারের নামে পরশুরাম উপজেলার নামকরণ করা হয়। অতিত ইতিহাস : উপজেলা সৃষ্টির সাথে সাথে এ পরশুরাম উপজেলা গঠিত হয়। তৎসময়ে ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে যাত্রা শুরু করে। গত ২০০২ সালের ২৭ শে মার্চ পরশুরাম উপজেলা ভেঙ্গে ফুলগাজী উপজেলা গঠিত হওয়ায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৩টি ইউনিয়ন নিয়ে পরশুরাম উপজেলা। বিগত ১৯৮৩ সাল থেকে এ উপজে...